হযরত নূত (আ.) এর নৌকা তৈরীর ঘটনা

হযরত নূত (আ.) এর নৌকা তৈরীর ঘটনা

 হযরত নূহ (আ.)



 



আরবী হতে বাংলার অনুবাদ : বড় নবী-রাসূলগণের মাঝে হযরত নূহ (আ.) -ও একজন বড় নবী ছিলেন। তাঁর সময় সকল মানুষ আল্লাহ তা'আলাকে একদম ভুলে গিয়েছল। এ জন্য আল্লাহ তা'আলা ঐ লােকদের পথ প্রদর্শনের জন্য তাঁকে নবী বানিয়ে প্রেরণ করেন। হযরত নূহ (আ.) দিন রাত লােকদেরকে ওয়াজ নসিহত করতেন এবং ঈমানের পথ দেখাতেন। প্রায় সাড়ে নয়শত বছর পর্যন্ত একাধারে ওয়াজ নসিহত করতে থাকেন। কিন্তু লােকদের প্রতি একটুও প্রতিক্রিয়া হয়নি। উল্টো লােকজন তার শত্রু হয়ে যায়।

 

তাঁর সাথে বেয়াদবী করতে থাকে। তাকে ভালাে মন্দ বলতে থাকে এবং ইট পাথর পর্যন্ত মারতে থাকে। হযরত নূহ (আ.) শুধু আল্লাহ তাআলার জন্য এ সমস্ত কষ্ট সহ্য করতেন এবং লােকজনকে বুঝাতেন। শেষ পর্যন্ত হযরত নূহ (আ.) লােকদের প্রতি একদম নিরাশ হয়ে যান এবং লােকদের প্রতি বিরক্ত হয়ে তাদের প্রতি বদ দোয়া করতে লাগলেন।আল্লাহ তাআলা তাঁর বদদোয়া কবুল করলেন এবং তাঁকে এও বলে দিলেন যে, যে সকল লােক আপনার উপর ঈমান আনে এবং আমার নির্দেশ অনুযায়ী চলে, তাদের ব্যতিত অবশিষ্ট সকল লােককে পানিতে ডুবিয়ে নি:শেষ করে দিব। হযরত নূহ (আ.) কে আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে নির্দেশ করা হয় যে, একটি বড় নৌকা তৈরী করে নাও।


সুতরাং তিনি একটি বড় নৌকা তৈরী করা আরম্ভ করলন এবং লােকদেরকে শেষ বারের ন্যায় আবারও বুঝাতে লাগলেন যে, দেখাে! তােমাদের উপর পানির প্রবল বন্যা এবং ঝড়-তুফান ধেয়ে আসছে, যদি এখনাে ঈমান আনাে তাহলে বেঁচে যেতে পারাে, অন্যথায় সকলেই বন্যার পানিতে ডুবে মারা যাবে। সে সময়ও লােকজন তার কথা মানলাে না বরং তাঁর প্রতি বিদ্রুপ করতে লাগলাে যে, কোথাও পানির নাম নিশানাও নেই,

নৌকা কেন তৈরী করছে? হয়তাে মাথা নষ্ট হয়ে গেছে! হযরত নূহ (আ.) তাঁর অনুসারীদেরকে নিয়ে নৌকায় আরােহণ করলেন।

এবং প্রত্যেক শ্রেণীর পর এক এক জোড় করে নৌকায় তুলে নিলেন। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তা'আলার নির্দেশ চল্লিশ দিবস রজনী অনবরত মুসলধারে আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষিত হতে লাগলাে এবং যমীনের নীচ থেকেও পানি বের হতে লাগল। এভাবে উঁচু উঁচু পর্বত, বৃক্ষ, বাড়ী ঘর সব

কিছু পানির মাঝে ডুবে গেল এবং সুম্পর্ন দুনিয়াই, ডুবে গেল। হযরত নূহ (আ.) -এর এক ছেলে (কেনান) যে কাফের ছিল, সে তার পিতার কথা মানত না, সেও বাঁচতে পারেনি। এবং সে পানিতে ডুবে মারা গেল। যখন সম্পূর্ণ পৃথিবী ডুবে গেল তখন পানি বর্ষণ বন্ধ হয়ে গেল, সম্পূর্ণ পানি মাটির নীচে চলে গেল এবং জমীন শুকিয়ে গেল।


হযরত নূহ (আ.) -এর নৌকা (জুদী নামক) এক পর্বতে থামল। নৌকায় হযরত নূহ (আ.) -এর যত অনুসারী বসা ছিল শুধু তারাই বেঁচে গেল। এই সকল লােক যমীন অর্থাৎ, পৃথিবীর বুকে পুনরায় আবাদ হলাে (বসতী স্থাপন করল) ঐ সকল লােক থেকে বংশ বিস্তার শুরু হলাে এবং পৃথিবী (পূর্বে) যেমন বসবাসের যােগ্য ছিল তেমনি বসবাসের যােগ্য হয়ে গেল। কিছু দিন পর লােকজন আবার আল্লাহ তাআলার অবাধ্যতা করতে লাগলাে। হযরত নূহ (আ.) -এর ঝড় তুফানকে ভুলে গেল। আর লােকজন এ ঘটনাকে পুরাতন ঘটনা মনে করতে লাগলাে। (আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে মন্দকর্ম থেকে হেফাজত করুন। আমীন)।

এই পোস্টগুলি আপনার ভাল লাগতে পারে